রাজশাহীর আম্রপালি আমের কিছু উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য নিচে দেওয়া হলো:

1. আকার ও গঠন: আম্রপালি আম ছোট থেকে মাঝারি আকারের হয়ে থাকে। ছোট জাতের আমের গড় ওজন প্রায় ১৭০ গ্রাম এবং বড় জাতের আমের গড় ওজন ৩৫০ গ্রাম পর্যন্ত হতে পারে। এর খোসা পাতলা ও মসৃণ।
2. রং: কাঁচা অবস্থায় আমের ত্বকের রং সবুজ থাকে। পাকলে এটি গাঢ় হলুদ রঙের হয় এবং এর ওপর হালকা লালাভ আভা দেখা যায়, যা দেখতে আকর্ষণীয়।
3. শাঁস ও স্বাদ: এর শাঁস আঁশবিহীন এবং গাঢ় কমলা রঙের হয়। এটি অত্যন্ত রসালো, সুস্বাদু এবং সুগন্ধযুক্ত। আম্রপালি আমে আঁশ একেবারেই থাকে না এবং এর মিষ্টতা খুব কড়া, প্রায় শতভাগ মিষ্টি। অন্যান্য বাণিজ্যিক জাতের আমের তুলনায় এতে প্রায় ২.৫-৩ গুণ বেশি বিটা-ক্যারোটিন থাকে।
4. পাকা ও সংরক্ষণ: আষাঢ় মাসের শেষ সপ্তাহে আম্রপালি আম পাকতে শুরু করে। ফল সংগ্রহের পর পাকতে প্রায় ৫-৬ দিন সময় লাগে। শীতল স্থানে এটি ৭-১০ দিন পর্যন্ত ভালো থাকে, যা এটিকে বাণিজ্যিকভাবে অত্যন্ত সফল করে তুলেছে।
5. গাছের বৈশিষ্ট্য: আম্রপালি গাছ বামন আকৃতির হয়। এটি কম দূরুত্বে, অর্থাৎ ২.৫ মিটার পর পর রোপণ করা সম্ভব। গাছে প্রচুর ফল ধরে এবং প্রতি বছর ফল আসে। রোপণের দ্বিতীয় বছর থেকেই ফল পাওয়া যায়।
6. মিষ্টতার মাত্রা: আম্রপালির মিষ্টির মাত্রা প্রায় ২৬ শতাংশ, যা সব আমের মধ্যে সর্বোচ্চ।
7. জনপ্রিয়তা: এর ছোট আকার, কম আঁশ, ঘন সুগন্ধ, কড়া মিষ্টি স্বাদ এবং দীর্ঘ সময় সংরক্ষণযোগ্যতার কারণে এটি বাংলাদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি আম। বাণিজ্যিকভাবে এটি সবচেয়ে সফল আমগুলোর মধ্যে অন্যতম।

রাজশাহীর আবহাওয়া আম চাষের জন্য খুবই উপযুক্ত। শুষ্ক ও ঠাণ্ডা আবহাওয়া পুষ্পায়নের জন্য এবং শুষ্ক ও গরম আবহাওয়া পরিপক্কতার জন্য জরুরি, যা রাজশাহীতে বিদ্যমান। এই কারণে এখানকার আম, বিশেষ করে আম্রপালি, স্বাদে অতুলনীয় হয়।